টেকনাফ প্রতিনিধি:
কক্সবাজারের টেকনাফে কোস্টগার্ডের অভিযানে আটক মো.শহিদ উল্লাহকে পরিকল্পিতভাবে অস্ত্র দিয়ে মামলায় ফাঁসানোর অভিযোগ এনে মানববন্ধন করেছেন তাঁর পরিবার, এলাকাবাসী ও ছাত্রজনতা।
রবিবার(২৯ সেপ্টেম্বর) দুপুরে টেকনাফ বাসস্টেশন সী-কোরাল রিসোর্টের সামনে এলাকাবাসী ও কলেজ শিক্ষার্থীরা উক্ত মানববন্ধনের আয়োজন করেন।
মানববন্ধনে এলাকাবাসী, কলেজ শিক্ষার্থী ও পরিবারের সদস্যরা বক্তব্য রাখেন। কলেজ শিক্ষার্থী শাহিনুর রহমান মানবন্ধনে বলেন, শহিদ কে ডেকে নিয়ে অস্ত্র দিয়ে মামলায় ফাঁসানো হয়েছে। ‘একজন তৈলের দোকানদারকে ফাঁসিয়ে আমাদের চোখের সামনেই আটকের নাটক মঞ্চস্থ করা হয়েছে।
তিনি বলেন, আটক শাহিদের পরিবারের সামনেই বাড়িতে তল্লাশি করে কিছুই পায়নি। কিন্তু বাড়ি থেকে প্রায় ৮০-১০০ ফুট দূরে সুপারি বাগান থেকে বস্তায় মোড়ানো অস্ত্র নিয়ে আসে। তখন আমরা বাকরুদ্ধ এবং শহিদ উল্লাহ পাথরের মতো দাঁড়িয়ে হাউ মাউ করে কান্না শুরু করে। এরপর অস্ত্র পাওয়ার কথা বলে তাকে অস্ত্রসহ ধরে নিয়ে যায় কোস্টগার্ড। আমাদের কলেজ শিক্ষার্থীদের দাবি সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে তাকে দ্রুত মামলা থেকে অব্যাহতি দেয়া হোক।
মানবন্ধনে উপস্থিত এলাকাবাসী বলেন, ‘মূলত ঘটনাটি হচ্ছে এলাকার চোরাকারবারি মোয়াজ্জেম হোসেন প্রকাশ দানু ও আবদুল আমিন প্রকাশ রুল্ল্যা মাঝিকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে মুন্ডারডেইল নৌঘাটে মো. শহিদ উল্লাহকে সভাপতি বানানো হয়। ফলে তাদের চোরাচালান বাঁধা হয়ে দাঁড়ায় শহিদ। এ কারণে মাদক কারবারিরা ষড়যন্ত্র করে মিয়ানমার থেকে আসা অস্ত্র দিয়ে কোস্টগার্ডকে ভুল তথ্য দিয়ে সুপারি বাগানে অস্ত্র দিয়ে মিথ্যা মামলা ফাঁসিয়েছেন। শহিদ উল্লাহ কোন প্রকার অবৈধ মাদক ও মানবপাচারের সাথে জড়িত ছিল না।
যা তদন্ত করলে সত্যতা বেরিয়ে আসবে। মাদক, মানবপাচার, মিয়ানমারে পণ্য পাচার সুবিধাজনক হবে এ চিন্তা করে তাকে অস্ত্র দিয়ে কোস্টগার্ড কর্তৃক গ্রেপ্তার করাই। তাই অস্ত্রসহ আটক দেখানো ষড়যন্ত্রমূলক মিথ্যা মামলায় দিয়ে ফাঁসানো হয়েছে। আমরা বর্তমান সরকারের কাছে তদন্তপূর্বক মামলা প্রত্যাহার ও তার মুক্তি দাবি করছি।’
শহিদের স্ত্রী জেয়াসমিন করিম জোসনা তিন সন্তানকে পাশে রেখে মানবন্ধনে দাঁড়িয়ে কান্না কণ্ঠে বলেন, ‘আমার তিন সন্তান, কোনোদিন দেখেনি স্বামী কোন অবৈধ কার্যক্রমে জড়িত ছিল। মূলত নৌ-ঘাটের সভাপতি হওয়ার পর আমার স্বামীর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র নেমেছে এবং মাদক অস্ত্র দিয়ে ফাঁসানোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছিল চোরাকারবারিরা।
গত কয়েকদিন আগেও আমার স্বামীকে অস্ত্র দিয়ে কোস্টগার্ডকে কর্তৃক আটক করিয়ে দিবে বলে হুমকি দিয়েছিল মাদক কারবারি শাকের মাঝি গং। আমার স্বামীকে যারা অস্ত্র দিয়ে ফাঁসিয়েছে তদন্তের মাধ্যমে তাদের আইনের আওতায় আনা হোক এবং আমি সঠিক তদন্তের মাধ্যমে সুষ্ঠু বিচার দাবি করছি সরকারের কাছে।’
মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন, বাদশা মিয়া, আয়ুব খান, মুখলেসুর রহমান, নুরুল আলম, জেসমিন আক্তার, ফাতেমা খাতুন, হাছিনা, জুবাইদা প্রমুখ। এছাড়াও স্থানীয় বিভিন্ন স্কুল ও কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থী এবং গণমাধ্যম ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য গতকাল শনিবার এক সংবাদ সম্মেলনে কোস্টগার্ডের টেকনাফ স্টেশন কমান্ডার লে. লুৎফুল লাহিল মাজিদ জানান, ‘শহিদ দীর্ঘদিন যাবত পার্শ্ববর্তী দেশ মিয়ানমার থেকে অস্ত্র পাচার করে টেকনাফের ডাকাত দলকে সরবরাহ করছিল। এদিন রাতে শহিদের বাড়িতে অভিযান ও তল্লাশি চালিয়ে ১টি জি-৩ রাইফেল, ম্যাগাজিন, ৮ রাউন্ড তাজাগুলি ও ১ টি দেশীয় চাপাতি উদ্ধার করেন এবং শহিদ উল্লাহ কে আটক করে।
আমরা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।